বৃহস্পতিবার ৪ ডিসেম্বর ২০২৫ - ১৮:১৭
ইরানের সেনাবাহিনী ধারাবাহিকভাবে প্রতিরক্ষা সক্ষমতা বাড়িয়ে চলেছে

ইরানের সেনাবাহিনীর প্রধান মেজর জেনারেল আমির হাতামী বলেছেন, ১২ দিনের যুদ্ধের পর থেকে ইরানের সামরিক বাহিনী অবিচ্ছিন্নভাবে প্রতিরক্ষা সক্ষমতা বৃদ্ধি করে যাচ্ছে এবং ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে কার্যকর প্রতিরোধ বজায় রেখেছে।

হাওজা নিউজ এজেন্সি: সেনাবাহিনী সদর দফতর পরিদর্শনকালে সংসদের বাজেট ও পরিকল্পনা কমিশনের সদস্যরা দেশটির সেনাপ্রধানের সঙ্গে বৈঠক করেন। এ সময় জেনারেল হাতামী বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের নেতৃত্বে বৈশ্বিক আধিপত্যবাদী শক্তির শত্রুতা ইরানি বিপ্লবের সূচনা থেকেই বিরাজমান। ইরান যত এগিয়েছে, শত্রুতার পরিধি ও তীব্রতাও তত বেড়েছে।

সাম্প্রতিক ১২ দিনের যুদ্ধের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা চলার সময়ই মার্কিন সমর্থন ও সমন্বয়ে ইসরায়েল ইরানের বিরুদ্ধে বর্বর আক্রমণ চালায়। ওই হামলার উদ্দেশ্য ছিল ইরানের পারমাণবিক, ক্ষেপণাস্ত্র ও বিমান প্রতিরক্ষা সক্ষমতা ধ্বংস করা এবং সামরিক নেতৃত্বকে লক্ষ্যবস্তু বানিয়ে ইসলামি ব্যবস্থাকে দুর্বল করে দেওয়া। কিন্তু সর্বোচ্চ নেতার কৌশলগত নির্দেশনা, সামরিক নেতৃত্বে প্রয়োজনীয় পরিবর্তন, সশস্ত্র বাহিনীর দৃঢ়তা এবং জনগণের সচেতনতার কারণে শত্রুর পরিকল্পনা ব্যর্থ হয় এবং শেষ পর্যন্ত তারা যুদ্ধবিরতির অনুরোধ জানাতে বাধ্য হয়।

জেনারেল হাতামী বলেন, “শত্রু তাদের লক্ষ্য অর্জন করতে পারেনি—এটাই আমাদের বিজয়।” তিনি আরও জানান, ইসরায়েল এখনও একটি গুরুতর হুমকি হলেও ইরান কখনো প্রতিরক্ষা সক্ষমতা বৃদ্ধির প্রচেষ্টা থামায়নি এবং সামরিক শক্তি উন্নয়ন সর্বদা সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার পেয়েছে।

তিনি ইরানের জনগণের নির্ণায়ক ভূমিকার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, দেশের সশস্ত্র বাহিনী ইসলামি ব্যবস্থার নিরাপত্তা রক্ষায় সর্বদা প্রস্তুত, এবং ইসলামি ব্যবস্থার প্রতি যেকোনো ক্ষতি দেশের স্বাধীনতা ও ভৌগোলিক অখণ্ডতার ওপর আঘাত হিসেবে বিবেচিত হবে।

বৈঠকে সেনাবাহিনীর স্টাফ প্রধান ও সমন্বয় উপপ্রধান রিয়ার অ্যাডমিরাল হাবিবুল্লাহ সাইয়ারি এবং অন্যান্য জ্যেষ্ঠ সামরিক ও সংসদ সদস্যরাও উপস্থিত ছিলেন। তারা জাতীয় প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা আরও শক্তিশালী করার উপায় নিয়ে মতবিনিময় করেন।

গত ১৩ জুন ইসরায়েল কোনো উসকানি ছাড়াই ইরানের ওপর ব্যাপক হামলা চালায়, যখন ওয়াশিংটন ও তেহরান পারমাণবিক আলোচনায় সম্পৃক্ত ছিল। এতে শুরু হওয়া ১২ দিনের যুদ্ধে অন্তত ১,০৬৪ জন নিহত হন—যাদের মধ্যে সামরিক কমান্ডার, পারমাণবিক বিজ্ঞানী এবং সাধারণ নাগরিকও ছিলেন।

যুদ্ধ চলাকালে যুক্তরাষ্ট্র আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় বোমা হামলা চালায়।

প্রতিশোধ হিসেবে ইরানের সশস্ত্র বাহিনী দখলকৃত ভূখণ্ডে গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্যবস্তুসহ কাতারের আল–উদেইদ ঘাঁটিতে হামলা চালায়— যা পশ্চিম এশিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় সামরিক স্থাপনা।

২৪ জুন ইরান তাদের সফল পাল্টা–অভিযানের মাধ্যমে ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র—উভয়ের আগ্রাসন থামাতে সক্ষম হয়।

আপনার কমেন্ট

You are replying to: .
captcha